ঢাকা ০২:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইশরাক হোসেনের মেয়র পদে শপথ হবে কি না, রায় আজ—হাইকোর্টে উত্তেজনার শেষ নেই

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৯:০২:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
  • ৫১৯ বার পড়া হয়েছে

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা রিট আবেদনের বিষয়ে আজ (২২ মে) বৃহস্পতিবার আদেশ দেবেন হাইকোর্ট। এর মাধ্যমে আজই জানা যাবে—ইশরাক হোসেন মেয়র হিসেবে শপথ নিতে পারবেন কি না।

বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করবেন। একইসঙ্গে ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়েও আদেশ দেওয়া হবে।

গতকাল বুধবার রিটের ওপর দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে রায় ঘোষণার সময় নির্ধারণ করা হয়। আদালতে ইশরাক হোসেনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। তাদের সহযোগিতা করেন একেএম এহসানুর রহমান, গাজী তৌহিদুল ইসলাম ও মো. মাকসুদ উল্লাহ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান মিলন ও খান জিয়াউর রহমান।

ইশরাকের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, তারা আশা করছেন রিট আবেদনটি সরাসরি খারিজ হবে। অন্যদিকে রিটের পক্ষে থাকা আইনজীবী জহিরুল ইসলাম মুসা আদালতে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায়ে ‘আইনি অসঙ্গতি ও প্রক্রিয়াগত ত্রুটি’ রয়েছে বলে যুক্তি তুলে ধরেন।

নির্বাচন ও বিতর্কের পটভূমি

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র নির্বাচিত হন। বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেন ওই নির্বাচনে পেয়েছিলেন ২ লাখ ৩৬ হাজার ভোট, আর তাপস পেয়েছিলেন সোয়া চার লাখ ভোট। নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে ফলাফল বাতিলের দাবিতে ইশরাক ২০২০ সালের ৩ মার্চ ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন।

২০২৩ সালের আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মেয়রদের পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়। এরপর প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেন অতিরিক্ত সচিব শাহজাহান মিয়া। এরপর গত ২৭ মার্চ ট্রাইব্যুনাল শেখ ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণা বাতিল করে ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করেন এবং ১০ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন। নির্বাচন কমিশন সেই নির্দেশনা অনুযায়ী ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে।

রিট ও আইনি দ্বন্দ্ব

এই গেজেটকে চ্যালেঞ্জ করে রফিকুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ নামে দুই ব্যক্তি হাইকোর্টে রিট করেন। তারা দাবি করেন, যথাযথ প্রক্রিয়া না মেনে দ্রুত রায় দেওয়া হয়েছে এবং ট্রাইব্যুনাল এমন আদেশ দিতে পারেন না যার কার্যকারিতা শেষ হয়ে গেছে। তাদের মতে, মেয়রের মেয়াদ ইতোমধ্যেই শেষ হওয়ায় গেজেট কার্যকর নয়।

এই রিটে ২৭ মার্চের রায় ও ২৭ এপ্রিলের গেজেট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং ইশরাককে শপথ নিতে বাধা দেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না—তা জানতে চেয়ে রুল জারির আবেদন জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে আদেশ কার্যক্রম স্থগিত রাখার অনুরোধও করা হয়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

চীনের মধ্যস্থতায় কাছাকাছি পাকিস্তান-আফগানিস্তান, সম্পর্ক উন্নয়নে ঐকমত্য

ইশরাক হোসেনের মেয়র পদে শপথ হবে কি না, রায় আজ—হাইকোর্টে উত্তেজনার শেষ নেই

আপডেট সময় ০৯:০২:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা রিট আবেদনের বিষয়ে আজ (২২ মে) বৃহস্পতিবার আদেশ দেবেন হাইকোর্ট। এর মাধ্যমে আজই জানা যাবে—ইশরাক হোসেন মেয়র হিসেবে শপথ নিতে পারবেন কি না।

বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করবেন। একইসঙ্গে ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়েও আদেশ দেওয়া হবে।

গতকাল বুধবার রিটের ওপর দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে রায় ঘোষণার সময় নির্ধারণ করা হয়। আদালতে ইশরাক হোসেনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। তাদের সহযোগিতা করেন একেএম এহসানুর রহমান, গাজী তৌহিদুল ইসলাম ও মো. মাকসুদ উল্লাহ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান মিলন ও খান জিয়াউর রহমান।

ইশরাকের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, তারা আশা করছেন রিট আবেদনটি সরাসরি খারিজ হবে। অন্যদিকে রিটের পক্ষে থাকা আইনজীবী জহিরুল ইসলাম মুসা আদালতে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায়ে ‘আইনি অসঙ্গতি ও প্রক্রিয়াগত ত্রুটি’ রয়েছে বলে যুক্তি তুলে ধরেন।

নির্বাচন ও বিতর্কের পটভূমি

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র নির্বাচিত হন। বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেন ওই নির্বাচনে পেয়েছিলেন ২ লাখ ৩৬ হাজার ভোট, আর তাপস পেয়েছিলেন সোয়া চার লাখ ভোট। নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে ফলাফল বাতিলের দাবিতে ইশরাক ২০২০ সালের ৩ মার্চ ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন।

২০২৩ সালের আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মেয়রদের পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়। এরপর প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেন অতিরিক্ত সচিব শাহজাহান মিয়া। এরপর গত ২৭ মার্চ ট্রাইব্যুনাল শেখ ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণা বাতিল করে ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করেন এবং ১০ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন। নির্বাচন কমিশন সেই নির্দেশনা অনুযায়ী ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে।

রিট ও আইনি দ্বন্দ্ব

এই গেজেটকে চ্যালেঞ্জ করে রফিকুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ নামে দুই ব্যক্তি হাইকোর্টে রিট করেন। তারা দাবি করেন, যথাযথ প্রক্রিয়া না মেনে দ্রুত রায় দেওয়া হয়েছে এবং ট্রাইব্যুনাল এমন আদেশ দিতে পারেন না যার কার্যকারিতা শেষ হয়ে গেছে। তাদের মতে, মেয়রের মেয়াদ ইতোমধ্যেই শেষ হওয়ায় গেজেট কার্যকর নয়।

এই রিটে ২৭ মার্চের রায় ও ২৭ এপ্রিলের গেজেট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং ইশরাককে শপথ নিতে বাধা দেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না—তা জানতে চেয়ে রুল জারির আবেদন জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে আদেশ কার্যক্রম স্থগিত রাখার অনুরোধও করা হয়েছে।