ইসরাইলের সঙ্গে টানা ১২ দিনের সংঘাতে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় প্রভাব ফেললেও ইরানের বিমান বাহিনীর দুর্বলতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এই ঘাটতি পূরণে এবার চীন থেকে অত্যাধুনিক চেংডু জে-১০সি যুদ্ধবিমান কেনার দিকে ঝুঁকছে তেহরান। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে চীনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা জোরদার করেছে ইরান। এমন তথ্য উঠে এসেছে মস্কো টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে।
এর আগে ইরান রাশিয়ার এসইউ-৩৫ যুদ্ধবিমান কেনার আগ্রহ দেখালেও শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। পরিবর্তে অপেক্ষাকৃত সাশ্রয়ী ও আধুনিক জে-১০সি ক্রয়ে মনোযোগ দিয়েছে দেশটি। উল্লেখযোগ্যভাবে, চীনের সঙ্গে এর আগেও ২০১৫ সালে ১৫০টি জে-১০সি কেনার চুক্তির চেষ্টা করেছিল ইরান। তবে বৈদেশিক মুদ্রা ও নিষেধাজ্ঞার কারণে সেটি সফল হয়নি।
২০২০ সালে জাতিসংঘের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হলে আলোচনা আবার শুরু হয়, যদিও সংখ্যা কমিয়ে ৩৬টিতে আনা হয় এবং অর্থনৈতিক শর্তাবলী নিয়ে মতভেদ থেকে যায়। তবে সাম্প্রতিক কৌশলগত পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে এবার চুক্তিটি চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
গত ২৪ জুন ইরান-ইসরাইল যুদ্ধবিরতির পরদিনই চীনে যান ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আজিজ নাসিরজাদেহ। তিনি সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠকে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি চীনের জে-১০সি যুদ্ধবিমান পরিদর্শন করেন। তার সেই সফরের ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয়।
বিশ্লেষকদের মতে, জে-১০সি যুদ্ধবিমান ইরানের জন্য ‘গেম চেঞ্জার’ হতে পারে। চতুর্থ-প্লাস প্রজন্মের মাল্টিরোল এই ফাইটার জেটটি আকাশ, স্থল ও ইলেকট্রনিক যুদ্ধের ক্ষেত্রে দক্ষ। প্রায় ২২০০ কিমি পাল্লার এই বিমান শক্তিশালী স্টিলথ ক্ষমতা, উন্নত রাডার ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতিপক্ষকে আগে শনাক্ত করে আঘাত হানতে সক্ষম।
চীনের তৈরি এই বিমান পাকিস্তানও ব্যবহার করছে এবং একাধিক যুদ্ধ পরিস্থিতিতে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, জে-১০সি যুক্ত হলে ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা আরও শক্তিশালী হবে এবং ভবিষ্যতে ইসরাইলের মতো প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ প্রতিপক্ষের মোকাবিলায় একটি শক্ত অবস্থানে থাকবে দেশটি।
তবে ইরানি প্রশাসন এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এই চুক্তি বা সিদ্ধান্তের বিষয়ে কিছু প্রকাশ করেনি।