মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের পর পুড়ে যাওয়া শরীর নিয়ে স্কুল মাঠে দৌড়ে বেড়ানো সেই কিশোরটির নাম রবিউল হাসান নাবিল, ডাক নাম রোহান। পোড়া শরীরে বেঁচে থাকার মরিয়া চেষ্টায় তার দৌড়ানো ভিডিও মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে গোটা দেশে। ভিডিও দেখে কেঁদেছেন অগণিত মানুষ।
১৪ বছর বয়সী রোহান মাইলস্টোনের ইংরেজি ভার্সনের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এখনও পর্যন্ত তার শরীরের ৫০ শতাংশ পুড়ে গেছে। বর্তমানে সে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের এইচডিইউ ইউনিটে চিকিৎসাধীন।
মঙ্গলবার এই প্রতিবেদক যখন উত্তরা থেকে মেট্রো রেলে মতিঝিল যাচ্ছিলেন, ঠিক তখন এক ভদ্রলোক কাঁদতে কাঁদতে ফোনে বলছিলেন—
“ভাইরে, সেই ছেলেটা যে আগুনে দগ্ধ হয়ে স্কুল মাঠ দিয়ে দৌড়াচ্ছিল, সে আমার ছেলে।”
তিনি রোহানের বাবা নিজাম উদ্দিন, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের বাসিন্দা, বর্তমানে উত্তরার সেক্টর ১২-তে বসবাস করেন। কাঁপা কণ্ঠে বলেন—
“আমার ছেলের শরীরে তখন কোনও পোশাক ছিল না। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় কিছু মানুষ তাকে রিকশায় করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তখনও আমরা জানতাম না, ও কোথায় আছে। পরে হাসপাতালেই সে নিজেই মায়ের নম্বর বলে দেয়।”
তার মা নাসিমা বেগম এখন সন্তানের পাশে, বার্ন ইউনিটে। একই মেট্রোর কোচে ছিলেন রোহানের চাচা মোতাছের হোসেন, তিনিও ছুটে এসেছেন সন্দ্বীপ থেকে।
রোহানের পরিবারের আরও সদস্যরাও মাইলস্টোনেই পড়েছেন— বড় ভাই শিহাব এবং একমাত্র বোন নাসরিন সুলতানা নুপুর। নিজাম বলেন,
“বছরের পর বছর ধরে এই স্কুলেই আমার সন্তানদের পড়িয়েছি। সোমবার সকালে আমি নিজেই রোহানকে স্কুল গেটে নামিয়ে দিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু সে আর বাড়ি ফেরেনি…”
মেট্রোরেল চলছিল, কিন্তু বাবার কান্না স্তব্ধ করে দিয়েছিল পুরো কোচের পরিবেশ। যাত্রীরা চুপচাপ, কেউ কেউ চোখ মুছছিলেন।