এবার ভারতের সেনাবাহিনীর আকাশ প্রতিরক্ষা শাখার মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল সুমের আইভান ডি’কুনহা দাবি করেছেন, পাকিস্তানের পুরো ভূখণ্ড ভারতের হামলার সীমার মধ্যে রয়েছে। সোমবার (২০ মে) একটি সাক্ষাৎকারে, ইভান ডি’কুনহা বলেন, “পাকিস্তানের যেকোনো অংশ আমাদের পাল্লার মধ্যে রয়েছে। তারা যদি তাদের সেনা সদর দপ্তর (GHQ) রাওয়ালপিন্ডি থেকে খাইবার পাখতুনখোয়ায় সরিয়ে নিতে চায়, তাও কোনো কাজে আসবে না—তাদের গভীর গর্ত খুঁজে নিতে হবে।”
এদিকে পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের প্রেক্ষাপটে তিনি ভারতের সামরিক সক্ষমতা নিয়ে এমন মন্তব্য করেন। ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআইয়ের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (২০ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। এই বক্তব্যটি আসে ভারতের সাম্প্রতিক সামরিক অভিযান “অপারেশন সিন্ধুর” পরিপ্রেক্ষিতে, যেখানে ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করে নির্ভুলভাবে আঘাত হানে। অভিযানটিতে ব্যবহৃত হয় লুইটারিং মিউনিশন বা ঘুরে ঘুরে টার্গেট খুঁজে আঘাত হানার উপযুক্ত ড্রোন অস্ত্র।
ডি’কুনহা আরও বলেন, “আমাদের অস্ত্রভাণ্ডার যথেষ্ট পরিমাণে প্রস্তুত রয়েছে—যেকোনো স্থানেই হোক, পাকিস্তানকে আমরা পুরোপুরি প্রতিহত করতে পারি। পাকিস্তানের পুরো ভূখণ্ডই আমাদের হামলার আওতায়। ওরা যদি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জেনারেল হেডকোয়ার্টার (জিএইচকিউ) রাওয়ালপিন্ডি থেকে কোথাওসরিয়েও নেয়, আমরা তাদের ধরতে পারবো। তাই বলছি, গভীর গর্ত খুঁজে নিতে হবে। সীমান্ত হোক বা দেশের (ভারতের) অভ্যন্তর থেকে—ভারত যেকোনও জায়গা থেকে হামলা চালাতে প্রস্তুত।”
ডি’কুনহা দাবি করেন, “আমাদের প্রধান কাজ হলো দেশের সার্বভৌমত্ব ও জনগণকে রক্ষা করা। শত্রুপক্ষ যেসব হামলা চালাতে চেয়েছিল জনবসতিপূর্ণ অঞ্চল বা সেনানিবাসের ওপর—সেগুলোর বিরুদ্ধে সফল প্রতিরোধ গড়ে তোলা আমাদের বড় অর্জন।” তিনি আরও দাবি করেন, সেনানিবাসে বহু সেনা, অফিসার ও তাদের পরিবার থাকেন। ড্রোন হামলার আশঙ্কায় তারা আতঙ্কিত ছিলেন। এই অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় সেনা, তাদের পরিবার এবং গোটা দেশ গর্বিত।
প্রসঙ্গত, গত ৬ ও ৭ মে রাতে ভারত পাকিস্তানের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। জবাবে পাকিস্তান দ্রুত ও কঠোর প্রতিক্রিয়া জানায়। এই পাল্টা হামলায় পাকিস্তানের বিমানবাহিনী পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে। যার মধ্যে তিনটি রাফাল ফাইটার জেট। এছাড়া অন্য দুটি মিগ-২৯ এবং এসইউ-৩০ যুদ্ধবিমান।
এছাড়া ভারতের সঙ্গে সংঘাতের সময় ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি মিরাজ ২০০০ ফাইটার জেটও ভূপাতিত করেছিল পাকিস্তানের বিমান বাহিনী। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এই তথ্য নিশ্চিত করেন। এতে করে ভূপাতিত ভারতীয় যুদ্ধবিমানের সংখ্যা দাঁড়ায় ৬টিতে। উল্লেখ্য, টানা বেশ কয়েকদিনের হামলা, পাল্টা হামলা ও উত্তেজনার পর সম্প্রতি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে ভারত ও পাকিস্তান। এরপর উভয় দেশের সামরিক কর্মকর্তারা নিয়মিত একে-অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন এবং যুদ্ধবিরতির মেয়াদও বাড়াচ্ছেন।