ঢাকা ০৩:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জুলাই জাতীয় সনদে অঙ্গীকারনামায় পরিবর্তন আসছে, বাস্তবায়ন পদ্ধতি থাকবে না

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৮:৫৬:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৫৫৮ বার পড়া হয়েছে

সংস্কারের জুলাই জাতীয় সনদের চূড়ান্ত খসড়ায় অঙ্গীকারনামা অংশে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হচ্ছে। প্রধান পরিবর্তনগুলো হলো—সংবিধান ও আইনের ওপর সনদের প্রাধান্য ও আদালতে সনদ নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ সীমিত করার অঙ্গীকারে সংশোধনী। এছাড়া সনদে বাস্তবায়ন পদ্ধতি সরাসরি অন্তর্ভুক্ত থাকবে না; তা সুপারিশ আকারে সরকারকে দেবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং সরকারই নির্ধারণ করবে কোন পদ্ধতিতে সনদ বাস্তবায়ন হবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সূত্র জানিয়েছে, পূর্ণাঙ্গ খসড়ার দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ দফার অঙ্গীকারে পরিবর্তন আসছে। দ্বিতীয় দফায়, বিদ্যমান সংবিধান ও আইনের চেয়ে সনদের সুপারিশ প্রাধান্য পাবে এমন ভাষায় পরিবর্তন করা হচ্ছে, যাতে বিএনপি-সহ কিছু দলের আপত্তি মিটানো যায়। উদাহরণস্বরূপ, প্রধানমন্ত্রী পদে এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০ বছর দায়িত্ব পালন করতে পারবে—যেটি বিদ্যমান সংবিধানের চেয়ে ভিন্ন।

তৃতীয় দফায়, সনদ ব্যাখ্যা করার এখতিয়ার আপিল বিভাগের হাতে থাকবে—বিএনপি ও আটটি দল এ বিষয়ে রাজি নয়। কমিশন সূত্র জানিয়েছে, সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে ব্যাখ্যার ক্ষমতা আদালতের হাতে থাকবে, তাই আলাদা অঙ্গীকার প্রয়োজন নেই।

চতুর্থ দফায়, সনদের সুপারিশ ও প্রস্তাবকে সাংবিধানিকভাবে বলবৎ হিসেবে গণ্য করা এবং আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না—এ বিষয়ে বিএনপি আপত্তি জানিয়েছে। পরিবর্তিত খসড়ায় বলা হবে, সনদে স্বাক্ষর করা কোনো দল আদালতে প্রশ্ন তুলবে না।

কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, চূড়ান্ত খসড়া শিগগিরই দলগুলোকে পাঠানো হবে। দুই খণ্ডের সনদে থাকবে—প্রথম খণ্ডে এমন বিষয়সমূহ যেখানে রাজনৈতিক ঐকমত্য হয়েছে এবং সরকার প্রশাসনিক আদেশ বা অধ্যাদেশে তা কার্যকর করতে পারবে; দ্বিতীয় খণ্ডে থাকবে সংবিধান সংশোধনের জন্য যেসব সংস্কার প্রয়োজন এবং যেখানে সব দলের ঐকমত্য হয়নি।

সনদে মোট ১৬৬ সুপারিশের মধ্যে ৮৪টি প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা হয়েছে। ৭৩টির ওপর একমত হয়েছে, বাকি ১১টি মৌলিক সংস্কারের মধ্যে ৯টিতে বিএনপির আপত্তি রয়েছে। এগুলো হলো—পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠন, দুর্নীতি দমন কমিশন, তিনটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগে সাংবিধানিক কমিটি গঠন ইত্যাদি।

কমিশন সূত্র জানিয়েছে, ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে চূড়ান্ত সনদ দলগুলোর কাছে পাঠানো হবে। কোনো দল সই না করলে কমিশনের কিছু করার নেই। কমিশন রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে, তবে সব মতবিরোধ মেটানো সম্ভব হয়নি।

জনপ্রিয় সংবাদ

ডাকসু নির্বাচনে শিবিরের জয়ে অভিনন্দন জানিয়ে পোস্ট, পরে সরাল পাকিস্তান জামায়াত

জুলাই জাতীয় সনদে অঙ্গীকারনামায় পরিবর্তন আসছে, বাস্তবায়ন পদ্ধতি থাকবে না

আপডেট সময় ০৮:৫৬:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সংস্কারের জুলাই জাতীয় সনদের চূড়ান্ত খসড়ায় অঙ্গীকারনামা অংশে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হচ্ছে। প্রধান পরিবর্তনগুলো হলো—সংবিধান ও আইনের ওপর সনদের প্রাধান্য ও আদালতে সনদ নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ সীমিত করার অঙ্গীকারে সংশোধনী। এছাড়া সনদে বাস্তবায়ন পদ্ধতি সরাসরি অন্তর্ভুক্ত থাকবে না; তা সুপারিশ আকারে সরকারকে দেবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং সরকারই নির্ধারণ করবে কোন পদ্ধতিতে সনদ বাস্তবায়ন হবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সূত্র জানিয়েছে, পূর্ণাঙ্গ খসড়ার দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ দফার অঙ্গীকারে পরিবর্তন আসছে। দ্বিতীয় দফায়, বিদ্যমান সংবিধান ও আইনের চেয়ে সনদের সুপারিশ প্রাধান্য পাবে এমন ভাষায় পরিবর্তন করা হচ্ছে, যাতে বিএনপি-সহ কিছু দলের আপত্তি মিটানো যায়। উদাহরণস্বরূপ, প্রধানমন্ত্রী পদে এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০ বছর দায়িত্ব পালন করতে পারবে—যেটি বিদ্যমান সংবিধানের চেয়ে ভিন্ন।

তৃতীয় দফায়, সনদ ব্যাখ্যা করার এখতিয়ার আপিল বিভাগের হাতে থাকবে—বিএনপি ও আটটি দল এ বিষয়ে রাজি নয়। কমিশন সূত্র জানিয়েছে, সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে ব্যাখ্যার ক্ষমতা আদালতের হাতে থাকবে, তাই আলাদা অঙ্গীকার প্রয়োজন নেই।

চতুর্থ দফায়, সনদের সুপারিশ ও প্রস্তাবকে সাংবিধানিকভাবে বলবৎ হিসেবে গণ্য করা এবং আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না—এ বিষয়ে বিএনপি আপত্তি জানিয়েছে। পরিবর্তিত খসড়ায় বলা হবে, সনদে স্বাক্ষর করা কোনো দল আদালতে প্রশ্ন তুলবে না।

কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, চূড়ান্ত খসড়া শিগগিরই দলগুলোকে পাঠানো হবে। দুই খণ্ডের সনদে থাকবে—প্রথম খণ্ডে এমন বিষয়সমূহ যেখানে রাজনৈতিক ঐকমত্য হয়েছে এবং সরকার প্রশাসনিক আদেশ বা অধ্যাদেশে তা কার্যকর করতে পারবে; দ্বিতীয় খণ্ডে থাকবে সংবিধান সংশোধনের জন্য যেসব সংস্কার প্রয়োজন এবং যেখানে সব দলের ঐকমত্য হয়নি।

সনদে মোট ১৬৬ সুপারিশের মধ্যে ৮৪টি প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা হয়েছে। ৭৩টির ওপর একমত হয়েছে, বাকি ১১টি মৌলিক সংস্কারের মধ্যে ৯টিতে বিএনপির আপত্তি রয়েছে। এগুলো হলো—পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠন, দুর্নীতি দমন কমিশন, তিনটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগে সাংবিধানিক কমিটি গঠন ইত্যাদি।

কমিশন সূত্র জানিয়েছে, ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে চূড়ান্ত সনদ দলগুলোর কাছে পাঠানো হবে। কোনো দল সই না করলে কমিশনের কিছু করার নেই। কমিশন রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে, তবে সব মতবিরোধ মেটানো সম্ভব হয়নি।