গাজা উপত্যকার খান ইউনুস শহরের আলমাত্তা পাড়ায় এক ব্যতিক্রমধর্মী অভিযানে নারীর ছদ্মবেশ ধারণ করে প্রবেশ করেও চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর একটি গোপন স্কোয়াড। ধরা পড়ে যাওয়ার পর পালাতে গিয়ে তারা রেখে গেছে ছদ্মবেশ, কাপড়চোপড় এবং ব্যাগপত্র।
সোমবার (১৯ মে) সকালে একটি সাদা মিনিবাসে করে গাজার দক্ষিণের আলমাত্তা এলাকায় প্রবেশ করে তারা। বাসটিতে কয়েকজন নারীসদৃশ ব্যক্তি ছিলেন, যাদের কেউ মুখ ঢেকে রেখেছিল, কেউ বা খোলা রেখেছিল। স্থানীয়দের কাছে দৃশ্যটি বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি নারীদের আগমনের মতোই মনে হয়। তবে কিছুক্ষণ পরই তারা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত সারাহান পরিবারের বাড়িতে প্রবেশ করে।
বাড়িতে ঢোকার কিছু সময় পরই শুরু হয় গোলাগুলি। প্রায় ২০ মিনিট ধরে চলা বন্দুকযুদ্ধে ইসরায়েলি বাহিনী বিমান হামলার সহায়তা নেয়। তবে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের তৎপরতায় অভিযান ব্যর্থ হয় এবং ইসরায়েলি ইউনিটটি বাধ্য হয় পিছু হটতে।
ঘটনাস্থল থেকে ফেলে যাওয়া নারীদের পোশাক, ছদ্মবেশধারীদের ব্যাগ ও একটি খালি বাক্স উদ্ধার করা হয়। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের মতে, এই অভিযানের মূল উদ্দেশ্য ছিল স্থানীয় নেতা সারাহানকে অপহরণ করে তার কাছ থেকে বন্দি ইসরায়েলিদের বিষয়ে তথ্য আদায় করা।
অভিযানে নিহত হন নাসির সালাউদ্দিন ব্রিগেডের কমান্ডার আহমেদ কামাল সারান, এবং তার স্ত্রী ও সন্তানকে অপহরণ করে নিয়ে যায় ইসরায়েলি বাহিনী।
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে ইসরায়েল গাজা ও আশপাশের এলাকায় বড় ধরনের হামলার হুমকি দিয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েল-হামাস সংঘাতে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৫৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।
যদিও চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতির একটি চুক্তিতে সম্মত হয়েছিল ইসরায়েল, কিন্তু তা বারবার লঙ্ঘন করে যাচ্ছে। সর্বশেষ ১৮ মার্চ থেকে গাজায় আবারও বিমান হামলা শুরু করেছে তারা।
অন্যদিকে, ফিলিস্তিন, লেবানন ও ইয়েমেনের প্রতিরোধ যোদ্ধারা ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। ইসরায়েলের প্রধান বিমানবন্দরে হামলার পর ইয়েমেন হুঁশিয়ারি দিয়েছে আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার এবং হাইফা বন্দরে অবরোধ আরোপের ঘোষণা দিয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নেতানিয়াহুর ওপর যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দিলেও, এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি সরকার তাতে সাড়া দেয়নি।