বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য টাগবোট (টাগ বোট) সরবরাহে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে করা ২ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলারের (প্রায় ১৮০ কোটি রুপি) চুক্তি বাতিল করেছে বাংলাদেশ। ২০২৫ সালের ২৩ মে ভারতের একাধিক শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমে এই তথ্য প্রকাশ পায়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই চুক্তিটি ছিল কলকাতা-ভিত্তিক ‘গার্ডেন রিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড’ (GRSE)-এর সঙ্গে, যা ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। GRSE মূলত ভারতীয় নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জন্য জাহাজ নির্মাণ এবং রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করে থাকে।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো দাবি করছে, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যের স্থলপথে রপ্তানিতে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় বাংলাদেশ পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে এই চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়। উত্তেজনা আরও বেড়ে যায় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুসের এক মন্তব্যকে ঘিরে, যেখানে তিনি উত্তর-পূর্ব ভারতকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশকে “সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক” হিসেবে উল্লেখ করেন। এ মন্তব্যে ভারত ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায়।
এছাড়া, ড. ইউনুস চীনের প্রতি ওই অঞ্চল ব্যবহার করে বাণিজ্য সম্প্রসারণের আহ্বান জানান বলে গণমাধ্যমগুলো জানায়। এর পরপরই ভারত বাংলাদেশি পণ্যের জন্য স্থলবন্দর ব্যবহারে বিধিনিষেধ আরোপ করে।
‘ইন্ডিয়া টুডে’র ভাষ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের এই সিদ্ধান্তের ফলে ভারতের প্রতিরক্ষা খাতে একটি তাৎপর্যপূর্ণ প্রকল্প স্থগিত হয়ে গেছে। আর ‘এনডিটিভি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত আট বছরে ভারত বাংলাদেশকে লাইন অব ক্রেডিটের (LoC) আওতায় প্রায় ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দিয়েছে, যার মাধ্যমে বাংলাদেশে নানা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনার মাধ্যমে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার সাম্প্রতিক ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার একটি নতুন দিক স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।