ঢাকা ০৬:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় নিহত ৫৪ হাজার ছাড়াল, একদিনেই নিহত আরও ৭৯ ফিলিস্তিনি

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৯:০২:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫
  • ৫৩২ বার পড়া হয়েছে

অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের লাগাতার হামলায় একদিনেই কমপক্ষে আরও ৭৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ১৬৩ জন। এর ফলে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৫৪ হাজার ৫৬ জনে পৌঁছেছে।

মঙ্গলবার (২৭ মে) তুর্কি বার্তাসংস্থা আনাদোলু গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায়। মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নিহতদের মরদেহ বিভিন্ন হাসপাতালে পৌঁছেছে। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক, ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, বাস্তব পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ, কারণ বহু মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন কিংবা খোলা রাস্তায় পড়ে আছেন, কিন্তু টানা বোমাবর্ষণ ও নিরাপত্তাহীনতার কারণে উদ্ধারকর্মীরা সেখানে পৌঁছাতে পারছেন না।

বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধ ইতোমধ্যে ৬০০ দিন অতিক্রম করতে চলেছে। গত ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল নতুন করে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে, যাতে এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৯০১ জন নিহত এবং ১১ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই নতুন হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে ঘোষিত যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময়ের চুক্তি লঙ্ঘন করে চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলের এই সামরিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা একে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ বলে অভিহিত করেছে।

২০২৩ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। একইসঙ্গে, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা এক মামলার ভিত্তিতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ সংক্রান্ত বিচারপ্রক্রিয়াও চলছে।

৬০০ দিনের এই দীর্ঘ যুদ্ধের ফলে গাজায় চরম মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। খাদ্য, পানি, চিকিৎসাসহ মৌলিক সেবাগুলো ভেঙে পড়েছে। শিশু, নারী ও বয়স্কদের জীবন চরম ঝুঁকির মধ্যে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজায় চলমান মানবিক সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জরুরি হস্তক্ষেপ ছাড়া এই যুদ্ধের অবসান সম্ভব নয়। যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করাই এখন সবচেয়ে জরুরি চ্যালেঞ্জ।

জনপ্রিয় সংবাদ

মুজিব করেছি, এবার জিয়ার চরিত্রেও অভিনয় করতে প্রস্তুত আরিফিন শুভ

ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় নিহত ৫৪ হাজার ছাড়াল, একদিনেই নিহত আরও ৭৯ ফিলিস্তিনি

আপডেট সময় ০৯:০২:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫

অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের লাগাতার হামলায় একদিনেই কমপক্ষে আরও ৭৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ১৬৩ জন। এর ফলে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৫৪ হাজার ৫৬ জনে পৌঁছেছে।

মঙ্গলবার (২৭ মে) তুর্কি বার্তাসংস্থা আনাদোলু গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায়। মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নিহতদের মরদেহ বিভিন্ন হাসপাতালে পৌঁছেছে। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক, ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, বাস্তব পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ, কারণ বহু মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন কিংবা খোলা রাস্তায় পড়ে আছেন, কিন্তু টানা বোমাবর্ষণ ও নিরাপত্তাহীনতার কারণে উদ্ধারকর্মীরা সেখানে পৌঁছাতে পারছেন না।

বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধ ইতোমধ্যে ৬০০ দিন অতিক্রম করতে চলেছে। গত ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল নতুন করে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে, যাতে এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৯০১ জন নিহত এবং ১১ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই নতুন হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে ঘোষিত যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময়ের চুক্তি লঙ্ঘন করে চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলের এই সামরিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা একে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ বলে অভিহিত করেছে।

২০২৩ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। একইসঙ্গে, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা এক মামলার ভিত্তিতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ সংক্রান্ত বিচারপ্রক্রিয়াও চলছে।

৬০০ দিনের এই দীর্ঘ যুদ্ধের ফলে গাজায় চরম মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। খাদ্য, পানি, চিকিৎসাসহ মৌলিক সেবাগুলো ভেঙে পড়েছে। শিশু, নারী ও বয়স্কদের জীবন চরম ঝুঁকির মধ্যে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজায় চলমান মানবিক সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জরুরি হস্তক্ষেপ ছাড়া এই যুদ্ধের অবসান সম্ভব নয়। যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করাই এখন সবচেয়ে জরুরি চ্যালেঞ্জ।