গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর সাম্প্রতিক হামলায় আরও ১২০ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহতদের মধ্যে অন্তত ৫৭ জন মানুষ ত্রাণ সংগ্রহের সময় ইসরায়েলি হামলার শিকার হন। আহত হয়েছেন আরও ৩৬৩ জন। এ নিয়ে চলমান যুদ্ধে গাজায় মোট মৃতের সংখ্যা ৫৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এসব হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বিতরণকেন্দ্রগুলোতে, যেগুলোর কার্যক্রম পরিচালনা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত বিতর্কিত সংস্থা গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (Gaza Humanitarian Foundation – GHF)। এই কেন্দ্রগুলো মূলত ইসরায়েল-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানে নিয়মিতই ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিবর্ষণ ও বিমান হামলার ঘটনা ঘটছে।
আলোচিত বিতরণকেন্দ্রগুলোর একটি নেতজারিম করিডোরে এদিন বড় ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটে। ক্ষুধার্ত, দুর্বল সাধারণ মানুষ যখন খাবারের খোঁজে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন, তখন সেখানে নির্বিচারে হামলা চালানো হয়।
এত প্রাণহানির পরও বিতরণ কাজকে “বড় সাফল্য” বলে দাবি করেছে ইসরায়েল, যা আরও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। অপরদিকে, এই মানবিক বিপর্যয়ের ঘটনায় আবারও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ।
তবে হামলার দায় অস্বীকার করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। তাদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, নেতজারিম করিডোরে কোনো বড় হামলা চালানো হয়নি, বরং “সতর্কতামূলক গুলি” ছোঁড়া হয়েছিল।
এই অবস্থায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ বাড়ছে। ক্রমবর্ধমান সহিংসতা, সাধারণ মানুষের হতাহত এবং ত্রাণ সহায়তা কেন্দ্রেই প্রাণ হারানো – এসব বিষয় গাজা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে পুরো গাজা অঞ্চলেই এক ‘মানবিক গণহত্যা’র আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। তারা অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং নিরপেক্ষ মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।