আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা আরও বেড়েছে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সময়সীমা ঘোষণার পর। তিনি বলেন, আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে এই সময়সীমা নিয়ে সন্তুষ্ট নয় বিএনপি, যারা শুরু থেকেই ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চেয়ে আসছিল।
এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার লন্ডনে ডরচেস্টার হোটেলে ড. ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে রুদ্ধদ্বার বৈঠককে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টার ‘ওয়ান টু ওয়ান’ এই বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ সব ইস্যু আলোচিত হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র।
বিশ্বস্ত সূত্রগুলো জানিয়েছে, বিএনপির আলোচনার প্রধান এজেন্ডা হবে নির্বাচনের সময়সূচি এগিয়ে আনা। সরকার যদি এপ্রিল থেকে সরে আসে, বিএনপিও ডিসেম্বর থেকে সরে এসে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধকে গ্রহণযোগ্য সময় হিসেবে বিবেচনায় আনতে পারে।
এছাড়া আলোচনা হতে পারে—
-
চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা,
-
অন্তর্বর্তী সরকারের দায়-দায়িত্ব ও ভবিষ্যৎ ব্যবস্থাপনা,
-
‘জুলাই চার্টার’ বিষয়ক সংস্কার প্রস্তাব,
-
নির্বাচন-পরবর্তী সংসদে অন্তর্বর্তী কার্যক্রমের অনুমোদন,
-
বিচারিক ব্যবস্থা ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ইত্যাদি।
বিশ্লেষকদের মতে, এই আলোচনা ব্যর্থ হলে দেশের রাজনীতিতে নতুন করে জটিলতা দেখা দিতে পারে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন,
“এই ঐতিহাসিক আলোচনা সফল না হলে বহু সংকট দেখা দিতে পারে। তবে আমি বিশ্বাস করি, সমঝোতা হবে এবং দেশের রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আসবে।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন,
“আলোচনায় যাচ্ছি, এটাই বড় বিষয়। এখন আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। সে পর্যন্ত চুপ থাকাটাই শ্রেয়।”
জনগণের প্রত্যাশা, এই আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার পথ খুলবে, এবং দেশ একটি গ্রহণযোগ্য, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনমুখী ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাবে।