ঢাকা ১১:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গত অর্থবছরে শাহজালাল বিমানবন্দরে আয় ৩ হাজার কোটি

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বিদায়ী নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মো. কামরুল ইসলাম জানিয়েছেন, গত অর্থবছরে (২০২৩-২৪) বিমানবন্দরটি আয় করেছে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি। ৮০ লাখ যাত্রী বহনের সক্ষমতা থাকলেও গত বছর এ বিমানবন্দর দিয়ে যাতায়াত করেছেন রেকর্ড ১ কোটি ২০ লাখ যাত্রী

বুধবার (১৪ মে) বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সদর দপ্তরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান তিনি। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরাম অফ বাংলাদেশ (ATJFB)। এতে বিদায়ী নির্বাহী পরিচালক কামরুল ইসলামকে বিদায় জানানো হয় এবং নবনিযুক্ত পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এস এম রাগীব সামাদকে স্বাগত জানানো হয়।

২০২২ সালের ২২ মার্চ সরকার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলামকে শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে প্রেষণে নিয়োগ দেয়। তার নেতৃত্বে বিমানবন্দরের যাত্রীসেবা ও পরিচালনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে, যা যাত্রী ও সংশ্লিষ্ট মহলে প্রশংসিত হয়। রাজনৈতিক অস্থিরতা চলাকালেও তিনি বিমানবন্দরের কার্যক্রম নির্বিঘ্নভাবে চালিয়ে গেছেন।

যাত্রীসেবা ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধির উদ্যোগ

কামরুল ইসলাম জানান, যাত্রীদের লাগেজ দ্রুত পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে তার সময়ে স্বয়ংক্রিয় ট্র্যাকিং সিস্টেম চালু করা হয়। ফলে এখন ৮৫ শতাংশের বেশি লাগেজ এক ঘণ্টার মধ্যে যাত্রীদের কাছে পৌঁছে যায়। এছাড়া, যাত্রী অভিযোগের তাৎক্ষণিক সমাধানে চালু করা হটলাইনে ৯০ শতাংশ সমস্যার সমাধান ফোনেই দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।

গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সক্ষমতা বৃদ্ধির কথাও তুলে ধরেন তিনি। বলেন, “আমার মেয়াদে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি।”

অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে ভাড়া কমানোর সম্ভাবনা

সরকার অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে জেট ফুয়েলের দাম কমিয়েছে বলে জানান কামরুল ইসলাম। এর ফলে ফ্লাইটের ভাড়া কমবে এবং অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল আরও সক্রিয় হবে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, বর্তমান প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশের জিডিপিতে বিমান খাতের অবদান ৫-৬ শতাংশে পৌঁছাতে পারে, যা বর্তমানে ১ শতাংশেরও কম

তৃতীয় টার্মিনাল ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

২০২৪ সালের ডিসেম্বরে তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে যাত্রীসেবা ও যাত্রীসংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন বিদায়ী পরিচালক। তিনি বলেন, “বিদেশফেরত অভিবাসী কর্মীরা যাতে সম্মানজনক সেবা পান, সে বিষয়েও আমরা গুরুত্ব দিয়েছি।”

নতুন নির্বাহী পরিচালকের অঙ্গীকার

নবনিযুক্ত নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এস এম রাগীব সামাদ বলেন, “বিমানবন্দর একটি দেশের প্রতিচ্ছবি। বিদেশিরা বিমানবন্দর দেখেই দেশের মানসিকতা ও ব্যবস্থাপনার ধারণা পান। তাই আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে নতুন টার্মিনাল পরিচালনা করাই হবে প্রধান লক্ষ্য।”

সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা

অনুষ্ঠানে এটিজেএফবির সভাপতি তানজিম আনোয়ার বলেন, “গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম সবসময় সাংবাদিকদের তথ্য দিয়েছেন, প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন এবং বিমানবন্দরের বিষয়ে স্বচ্ছতা বজায় রেখেছেন। তার সময়ে সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণেরও আয়োজন করা হয়, যাতে তারা খাতটির আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় নিয়মনীতি সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝতে পারেন।”

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এটিজেএফবির সাধারণ সম্পাদক বাতেন বিপ্লব।

জনপ্রিয় সংবাদ

“বিজয় নিকটবর্তী”— গভীর রাতে কোরআনের আয়াত দিয়ে ফেসবুক পোস্টে বার্তা প্রেস সচিব শফিকুল আলমের

গত অর্থবছরে শাহজালাল বিমানবন্দরে আয় ৩ হাজার কোটি

আপডেট সময় ০৮:৩৩:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বিদায়ী নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মো. কামরুল ইসলাম জানিয়েছেন, গত অর্থবছরে (২০২৩-২৪) বিমানবন্দরটি আয় করেছে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি। ৮০ লাখ যাত্রী বহনের সক্ষমতা থাকলেও গত বছর এ বিমানবন্দর দিয়ে যাতায়াত করেছেন রেকর্ড ১ কোটি ২০ লাখ যাত্রী

বুধবার (১৪ মে) বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সদর দপ্তরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান তিনি। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরাম অফ বাংলাদেশ (ATJFB)। এতে বিদায়ী নির্বাহী পরিচালক কামরুল ইসলামকে বিদায় জানানো হয় এবং নবনিযুক্ত পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এস এম রাগীব সামাদকে স্বাগত জানানো হয়।

২০২২ সালের ২২ মার্চ সরকার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলামকে শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে প্রেষণে নিয়োগ দেয়। তার নেতৃত্বে বিমানবন্দরের যাত্রীসেবা ও পরিচালনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে, যা যাত্রী ও সংশ্লিষ্ট মহলে প্রশংসিত হয়। রাজনৈতিক অস্থিরতা চলাকালেও তিনি বিমানবন্দরের কার্যক্রম নির্বিঘ্নভাবে চালিয়ে গেছেন।

যাত্রীসেবা ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধির উদ্যোগ

কামরুল ইসলাম জানান, যাত্রীদের লাগেজ দ্রুত পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে তার সময়ে স্বয়ংক্রিয় ট্র্যাকিং সিস্টেম চালু করা হয়। ফলে এখন ৮৫ শতাংশের বেশি লাগেজ এক ঘণ্টার মধ্যে যাত্রীদের কাছে পৌঁছে যায়। এছাড়া, যাত্রী অভিযোগের তাৎক্ষণিক সমাধানে চালু করা হটলাইনে ৯০ শতাংশ সমস্যার সমাধান ফোনেই দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।

গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সক্ষমতা বৃদ্ধির কথাও তুলে ধরেন তিনি। বলেন, “আমার মেয়াদে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি।”

অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে ভাড়া কমানোর সম্ভাবনা

সরকার অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে জেট ফুয়েলের দাম কমিয়েছে বলে জানান কামরুল ইসলাম। এর ফলে ফ্লাইটের ভাড়া কমবে এবং অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল আরও সক্রিয় হবে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, বর্তমান প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশের জিডিপিতে বিমান খাতের অবদান ৫-৬ শতাংশে পৌঁছাতে পারে, যা বর্তমানে ১ শতাংশেরও কম

তৃতীয় টার্মিনাল ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

২০২৪ সালের ডিসেম্বরে তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে যাত্রীসেবা ও যাত্রীসংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন বিদায়ী পরিচালক। তিনি বলেন, “বিদেশফেরত অভিবাসী কর্মীরা যাতে সম্মানজনক সেবা পান, সে বিষয়েও আমরা গুরুত্ব দিয়েছি।”

নতুন নির্বাহী পরিচালকের অঙ্গীকার

নবনিযুক্ত নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এস এম রাগীব সামাদ বলেন, “বিমানবন্দর একটি দেশের প্রতিচ্ছবি। বিদেশিরা বিমানবন্দর দেখেই দেশের মানসিকতা ও ব্যবস্থাপনার ধারণা পান। তাই আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে নতুন টার্মিনাল পরিচালনা করাই হবে প্রধান লক্ষ্য।”

সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা

অনুষ্ঠানে এটিজেএফবির সভাপতি তানজিম আনোয়ার বলেন, “গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম সবসময় সাংবাদিকদের তথ্য দিয়েছেন, প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন এবং বিমানবন্দরের বিষয়ে স্বচ্ছতা বজায় রেখেছেন। তার সময়ে সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণেরও আয়োজন করা হয়, যাতে তারা খাতটির আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় নিয়মনীতি সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝতে পারেন।”

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এটিজেএফবির সাধারণ সম্পাদক বাতেন বিপ্লব।