ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে দেশে ফেরার জন্য রেজিস্ট্রেশন করা অনেক বাংলাদেশি এখন আর ফিরতে আগ্রহী নন। যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসার পর তাদের মনোভাব পাল্টে গেছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও তেহরানস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান,
“এখন পর্যন্ত ২৫০ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরতে নাম নিবন্ধন করেছেন। আজ (বুধবার) যাদের ফেরানোর কথা ছিল, সেই তালিকায় প্রথমে ৯২ জন ছিলেন। কিন্তু যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পর সেই সংখ্যা কমে ৪০ জনে নেমে আসে। এমনকি রাত ১০টার বাস ছাড়ার সময় সেই সংখ্যাটিও ২০ জনের নিচে চলে আসতে পারে বলে ধারণা।”
তেহরান থেকে পাকিস্তানের মারজাভেহ সীমান্ত দিয়ে বেলুচিস্তানের তাফতান পয়েন্টে প্রবেশ, সেখান থেকে করাচি হয়ে দুবাই ও পরে ঢাকায় পৌঁছানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিল। কিন্তু যাত্রাপথ জটিল ও দীর্ঘ হওয়ায় অনেকে সেই পথে ফিরতে আগ্রহী নন।
এক কর্মকর্তা বলেন,
“বাস ভরার মতো যাত্রীই নেই। অনেকে চিকিৎসার জন্য এসেছেন, তারা যুদ্ধ থেমে যাওয়ায় অপেক্ষা করতে চান, আকাশপথে ফিরতে আগ্রহী।”
সূত্র জানায়, ইরানে বর্তমানে আনুমানিক ২ হাজার বাংলাদেশি রয়েছেন। এর মধ্যে তেহরানে অবস্থান করছেন প্রায় ৪০০ জন। নিবন্ধিত বাংলাদেশির সংখ্যা ৬৭২, যার মধ্যে ৬৬ জন শিক্ষার্থী।
প্রসঙ্গত, গত ১২ জুন ইসরায়েলের হামলায় ইরানের একটি সামরিক স্থাপনায় বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়। পাল্টা জবাবে ইরানও ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়। ২১ জুন যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। টানা ১২ দিনের এই সংঘাতে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে অবশেষে গতকাল (২৪ জুন) ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।
অবস্থার উন্নতির পর ইরানে থাকা অনেক বাংলাদেশি, বিশেষ করে যাদের বৈধ কাগজ নেই বা যারা চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন, তারা এখন ফেরার সিদ্ধান্ত বদলে ফেলেছেন।