ঢাকা ০৩:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে: অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের নামে বিলম্বের অভিযোগ রাজনৈতিক দলগুলোর

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৮:০৮:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫
  • ৫১৯ বার পড়া হয়েছে

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘গণহত্যার বিচার, রাষ্ট্র সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অভিযোগ করেছেন, সরকার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের নামে নির্বাচন বিলম্বিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তারা স্পষ্টভাবে বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে হবে, এতে কোনো টালবাহানা চলবে না।

সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় থাকা বিপজ্জনক—এটা সরকারকে বোঝানোর চেষ্টা করছি। ডিসেম্বরের পর নির্বাচন করার যুক্তি থাকলে তা ব্যাখ্যা করুন।” তিনি আরও বলেন, বিচার দীর্ঘমেয়াদি একটি প্রক্রিয়া, আর নির্বাচন আলাদা বিষয়। দুটোকে গুলিয়ে ফেলা উচিত নয়।

বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থ বলেন, “নির্বাচনই হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সংস্কার। বাকি সংস্কার সময়ের ব্যাপার।” প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “ডিসেম্বরে নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি আপনার, এখন সেটা রাখার দায়িত্বও আপনার।”

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, “প্রতিবেশী দেশের হুমকির কারণে আমরা এখনও ন্যূনতম ঐক্য ধরে রাখতে পেরেছি। শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রেখে তারা অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চায়।”

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, “সরকার চাইলে ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন সম্ভব। একটি বিশেষ দলকে লালন করতে গিয়ে নয়-দশ মাস নষ্ট করা হয়েছে।”

বাংলাদেশ এলডিপির সভাপতি শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, “দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়। শুধু একটিমাত্র দল, যারা কেয়ামত পর্যন্ত নির্বাচন পেলে তাতেও আপত্তি করবে না।”

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, “ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত সময়ের কথা বলায় জনমনে অসন্তোষ ও সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত রোডম্যাপ ঘোষণা ও দৃশ্যমান বিচারের অগ্রগতি চাই।”

সভাপতির বক্তব্যে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, “সরকার রিফাইন্ড আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে আনতে চাইছে। কিছু উপদেষ্টা ব্যাংক লুটসহ নানা অপকর্মে জড়িত। মিডিয়াও নিয়ন্ত্রণে রাখা হচ্ছে।”

সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশের মহাসচিব গোলাম মহিউদ্দিন, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন ও গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল।

আলোচনা সভাটি পরিচালনা করেন গণঅধিকার পরিষদের সহসভাপতি ফারুক হাসান।

জনপ্রিয় সংবাদ

ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে: অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের নামে বিলম্বের অভিযোগ রাজনৈতিক দলগুলোর

আপডেট সময় ০৮:০৮:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘গণহত্যার বিচার, রাষ্ট্র সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অভিযোগ করেছেন, সরকার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের নামে নির্বাচন বিলম্বিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তারা স্পষ্টভাবে বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে হবে, এতে কোনো টালবাহানা চলবে না।

সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় থাকা বিপজ্জনক—এটা সরকারকে বোঝানোর চেষ্টা করছি। ডিসেম্বরের পর নির্বাচন করার যুক্তি থাকলে তা ব্যাখ্যা করুন।” তিনি আরও বলেন, বিচার দীর্ঘমেয়াদি একটি প্রক্রিয়া, আর নির্বাচন আলাদা বিষয়। দুটোকে গুলিয়ে ফেলা উচিত নয়।

বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থ বলেন, “নির্বাচনই হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সংস্কার। বাকি সংস্কার সময়ের ব্যাপার।” প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “ডিসেম্বরে নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি আপনার, এখন সেটা রাখার দায়িত্বও আপনার।”

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, “প্রতিবেশী দেশের হুমকির কারণে আমরা এখনও ন্যূনতম ঐক্য ধরে রাখতে পেরেছি। শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রেখে তারা অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চায়।”

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, “সরকার চাইলে ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন সম্ভব। একটি বিশেষ দলকে লালন করতে গিয়ে নয়-দশ মাস নষ্ট করা হয়েছে।”

বাংলাদেশ এলডিপির সভাপতি শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, “দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়। শুধু একটিমাত্র দল, যারা কেয়ামত পর্যন্ত নির্বাচন পেলে তাতেও আপত্তি করবে না।”

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, “ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত সময়ের কথা বলায় জনমনে অসন্তোষ ও সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত রোডম্যাপ ঘোষণা ও দৃশ্যমান বিচারের অগ্রগতি চাই।”

সভাপতির বক্তব্যে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, “সরকার রিফাইন্ড আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে আনতে চাইছে। কিছু উপদেষ্টা ব্যাংক লুটসহ নানা অপকর্মে জড়িত। মিডিয়াও নিয়ন্ত্রণে রাখা হচ্ছে।”

সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশের মহাসচিব গোলাম মহিউদ্দিন, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন ও গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল।

আলোচনা সভাটি পরিচালনা করেন গণঅধিকার পরিষদের সহসভাপতি ফারুক হাসান।