মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বড় ধরনের সাইবার সাফল্য দাবি করেছে প্রো-রেজিস্ট্যান্স (প্রতিরোধপন্থী) সাইবার ইউনিট “সাইবার সাপোর্ট ফ্রন্ট”। ইরানের আধা-সরকারি সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজ জানায়, এই ইউনিট ইসরায়েলের দুটি উচ্চ-প্রযুক্তি সামরিক ব্যবস্থার গোপন নথিপত্র হ্যাক করে প্রকাশ করেছে।
ফাঁস হওয়া প্রযুক্তি:
১. HattoriX –
ইসরায়েলের উন্নত স্থলভিত্তিক গোয়েন্দা ও টার্গেট শনাক্তকরণ সিস্টেম। এই প্রযুক্তি শত্রু অবস্থানে দূরপাল্লার নিখুঁত হামলার জন্য ব্যবহৃত হয়।
২. SPIKE-LR2 –
একটি পঞ্চম প্রজন্মের স্মার্ট গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র, যা মাল্টি-প্ল্যাটফর্ম থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য। আধুনিক যুদ্ধক্ষেত্রে নির্ভুল নিশানায় আঘাত হানার ক্ষমতা রাখে।
এই দুই অস্ত্রই তৈরি করেছে CR Casting/EXACT নামের একটি প্রতিষ্ঠান, যা ইসরায়েলের শীর্ষ দুই প্রতিরক্ষা কোম্পানি রাফায়েল ও এলবিট সিস্টেমসের চুক্তিভিত্তিক সরবরাহকারী।
সাইবার সাপোর্ট ফ্রন্ট জানায়, তারা সরাসরি CR Casting/EXACT-এর শিল্প অবকাঠামোতে প্রবেশ করে সামরিক তথ্য ও প্রযুক্তিগত ডেটা ভেঙে ফেলেছে। তাদের দাবি অনুযায়ী, এটি “ইসরায়েলের সামরিক-শিল্প কমপ্লেক্স ধ্বংসের অংশ” হিসেবে বৃহৎ কৌশলগত সাইবার অভিযানের একটি ধাপ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি শুধু তথ্য ফাঁস নয়, বরং ইসরায়েলের প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্বে এক সরাসরি চ্যালেঞ্জ।
এই সাইবার ইউনিট আগেও বেন সিমন অ্যালুমিনিয়াম ইন্ডাস্ট্রিজ নামের আরেক সামরিক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলা চালিয়ে তাদের সব অপারেশনাল সিস্টেম অচল করে দেয় এবং গোপন তথ্য প্রতিরোধ আন্দোলনের ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিটে সরবরাহ করে।
এছাড়া, ইসরায়েলের জাতীয় অস্ত্র প্রস্তুতকারক রাফায়েলের প্রযুক্তি সিস্টেমেও হ্যাকিং চালানো হয়েছে, ফলে কিছু প্রযুক্তি ব্যবস্থায় ‘কার্যকরী বিভ্রাট’ দেখা দেয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েলের সামরিক প্রযুক্তি সরবরাহ নেটওয়ার্কের ক্রমাগত দুর্বলতা এখন স্পষ্ট। এতে তাদের ভবিষ্যতের সামরিক অভিযান বা আত্মরক্ষামূলক প্রস্তুতি মারাত্মক হুমকির মুখে পড়তে পারে। বিশেষ করে গাজা, লেবানন ও ইরানের ফ্রন্টে ব্যবহৃত প্রযুক্তি নিরাপদ থাকছে না।