ঢাকা ০৬:৩০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৩০ বিলিয়নের বিনিময়ে ইরানকে ‘নমনীয়’ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র?

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১০:০৩:৩০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
  • ৫৬২ বার পড়া হয়েছে

ইরানকে আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে আনতে এবং তার পারমাণবিক কর্মসূচিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে গোপনে বড় ধরনের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ইরানকে প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের অর্থনৈতিক প্রণোদনার প্রস্তাব দিয়েছে। উদ্দেশ্য—তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে একটি বেসামরিক, অ-সমৃদ্ধকরণ পারমাণবিক কর্মসূচিতে ফিরিয়ে আনা।

সিএনএনের চারটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, এই আলোচনার আওতায় রয়েছে ইরানের ওপর থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া, ফ্রিজ হওয়া ৬ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ ব্যবহারের অনুমতি এবং একটি নতুন শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক প্রকল্পে ২০ থেকে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব। মার্কিন প্রশাসনের দাবি, এসব তহবিল সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র থেকে নয়, বরং উপসাগরীয় আরব অংশীদারদের মাধ্যমে আসতে পারে।

এই আলোচনাগুলো সম্পূর্ণ গোপনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং এর একটি অংশ সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও উপসাগরীয় মিত্রদের মধ্যে গোপন বৈঠকে চূড়ান্ত করা হয়েছে। বৈঠকটি হয়েছে ইসরায়েল ও ইরান একে অপরকে লক্ষ্য করে সামরিক হামলা চালানোর ঠিক আগের দিন।

সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি চুক্তির রূপরেখা তৈরি করতে চায়, যার মাধ্যমে ইরান তাদের বর্তমান পারমাণবিক সক্ষমতা কমিয়ে শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে সীমিত কর্মসূচি চালাতে পারবে। তবে একটি অনড় শর্তে যুক্তরাষ্ট্র এখনও অনড়—ইরান নিজ দেশে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে না। এ অবস্থায় প্রয়োজনীয় ইউরেনিয়াম আমদানির মাধ্যমে কর্মসূচি চালাতে পারবে, যা আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণে থাকবে।

উইটকফ বলেন, “আমরা চাই ইরান শান্তিপূর্ণ, উন্নত বেসামরিক পারমাণবিক প্রযুক্তি ব্যবহার করুক, তবে অস্ত্র তৈরির কোনো সুযোগ যেন না থাকে। এই মুহূর্তে তাদের সঙ্গে আলোচনা খুবই স্বাভাবিক।”

সিএনএনের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আলোচনায় অংশ নেওয়া মার্কিন ও মধ্যপ্রাচ্যের কূটনীতিকরা পরিস্থিতিকে অত্যন্ত সংবেদনশীল ও অনিশ্চিত হিসেবে চিহ্নিত করছেন। কারণ, যেকোনো মুহূর্তে সামরিক উত্তেজনা বেড়ে যেতে পারে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই প্রস্তাব ইরানকে আমেরিকার ঘনিষ্ঠতার দিকে টানার একটি নতুন প্রচেষ্টা, যার মাধ্যমে পশ্চিমা জোট পারমাণবিক বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। তবে ইরানের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এখনো পাওয়া যায়নি। প্রশ্ন উঠছে—ইরান কি এই শর্ত মানবে, নাকি আগের মতোই স্বাধীনভাবে পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাবে?

জনপ্রিয় সংবাদ

ভোটে অনিয়মে পুরো আসনের নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা ফেরত চায় ইসি

৩০ বিলিয়নের বিনিময়ে ইরানকে ‘নমনীয়’ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র?

আপডেট সময় ১০:০৩:৩০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

ইরানকে আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে আনতে এবং তার পারমাণবিক কর্মসূচিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে গোপনে বড় ধরনের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ইরানকে প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের অর্থনৈতিক প্রণোদনার প্রস্তাব দিয়েছে। উদ্দেশ্য—তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে একটি বেসামরিক, অ-সমৃদ্ধকরণ পারমাণবিক কর্মসূচিতে ফিরিয়ে আনা।

সিএনএনের চারটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, এই আলোচনার আওতায় রয়েছে ইরানের ওপর থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া, ফ্রিজ হওয়া ৬ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ ব্যবহারের অনুমতি এবং একটি নতুন শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক প্রকল্পে ২০ থেকে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব। মার্কিন প্রশাসনের দাবি, এসব তহবিল সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র থেকে নয়, বরং উপসাগরীয় আরব অংশীদারদের মাধ্যমে আসতে পারে।

এই আলোচনাগুলো সম্পূর্ণ গোপনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং এর একটি অংশ সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও উপসাগরীয় মিত্রদের মধ্যে গোপন বৈঠকে চূড়ান্ত করা হয়েছে। বৈঠকটি হয়েছে ইসরায়েল ও ইরান একে অপরকে লক্ষ্য করে সামরিক হামলা চালানোর ঠিক আগের দিন।

সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি চুক্তির রূপরেখা তৈরি করতে চায়, যার মাধ্যমে ইরান তাদের বর্তমান পারমাণবিক সক্ষমতা কমিয়ে শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে সীমিত কর্মসূচি চালাতে পারবে। তবে একটি অনড় শর্তে যুক্তরাষ্ট্র এখনও অনড়—ইরান নিজ দেশে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে না। এ অবস্থায় প্রয়োজনীয় ইউরেনিয়াম আমদানির মাধ্যমে কর্মসূচি চালাতে পারবে, যা আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণে থাকবে।

উইটকফ বলেন, “আমরা চাই ইরান শান্তিপূর্ণ, উন্নত বেসামরিক পারমাণবিক প্রযুক্তি ব্যবহার করুক, তবে অস্ত্র তৈরির কোনো সুযোগ যেন না থাকে। এই মুহূর্তে তাদের সঙ্গে আলোচনা খুবই স্বাভাবিক।”

সিএনএনের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আলোচনায় অংশ নেওয়া মার্কিন ও মধ্যপ্রাচ্যের কূটনীতিকরা পরিস্থিতিকে অত্যন্ত সংবেদনশীল ও অনিশ্চিত হিসেবে চিহ্নিত করছেন। কারণ, যেকোনো মুহূর্তে সামরিক উত্তেজনা বেড়ে যেতে পারে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই প্রস্তাব ইরানকে আমেরিকার ঘনিষ্ঠতার দিকে টানার একটি নতুন প্রচেষ্টা, যার মাধ্যমে পশ্চিমা জোট পারমাণবিক বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। তবে ইরানের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এখনো পাওয়া যায়নি। প্রশ্ন উঠছে—ইরান কি এই শর্ত মানবে, নাকি আগের মতোই স্বাধীনভাবে পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাবে?