ঢাকা ০৯:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘অপারেশন সিঁদুর’ ঘিরে ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রস্তুতি: হামলার অপেক্ষায় ছিল যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৫:৪৬:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
  • ৫৪০ বার পড়া হয়েছে

‘অপারেশন সিঁদুর’ চলাকালে পাকিস্তানের ভেতরে সামরিক হামলার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত ছিল ভারতীয় নৌবাহিনী। দেশের সামরিক ইতিহাসে অন্যতম উচ্চমাত্রার এ অভিযানের সময় সমুদ্রপথে আঘাত হানার জন্য ‘হট স্ট্যান্ডবাই’-এ ছিল যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন। একাধিকবার ভূমি-ভিত্তিক লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের জন্য আদেশের অপেক্ষায় ছিল বাহিনী। তবে শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত হামলার নির্দেশ আসেনি। এমন তথ্য উঠে এসেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, হামলা চালানো হলে করাচি বন্দরে অবস্থানরত পাকিস্তানের নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ, সাবমেরিন এবং অন্যান্য সামরিক স্থাপনায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হতো। এই অভিযানে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছিল ব্রহ্মোস সুপারসনিক মিসাইল ও ‘ক্লাব’ সিরিজের ল্যান্ড-অ্যাটাক ক্ষেপণাস্ত্র, যেগুলো রুশ-নির্মিত ‘কিলো ক্লাস’ সাবমেরিনে সংযুক্ত রয়েছে। সূত্রের ভাষায়, “যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন উভয়ই উৎক্ষেপণের অপেক্ষায় ছিল।”

ভারতীয় বাহিনীর প্রস্তুতির বিপরীতে পাকিস্তানের নৌবাহিনী প্রতিক্রিয়াশীল মনোভাব গ্রহণ করে। এনডিটিভি জানায়, ভারতের আধুনিক প্রযুক্তি ও সামরিক সক্ষমতা বিবেচনায় পাকিস্তানের ফ্রিগেট ও করভেট শ্রেণির যুদ্ধজাহাজগুলো সমুদ্রে না গিয়ে করাচি বন্দরে অবস্থান নেয়।
এমনকি আকাশপথেও ভারতের দখলদারি ছিল স্পষ্ট। বিমানবাহী রণতরী আইএনএস বিক্রান্ত এবং এর অন্তর্ভুক্ত মিগ-২৯কে যুদ্ধবিমান উত্তর আরব সাগরে ভারতীয় আধিপত্য নিশ্চিত করে। এ সময় পাকিস্তানের বিমানবাহিনী কার্যত নিষ্ক্রিয় ছিল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে স্থলভিত্তিক হামলার কথাও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে। যদিও ব্যবহৃত অস্ত্র ও প্রযুক্তির বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি, তবে এসব হামলায় পাকিস্তানের অভ্যন্তরে বেশ কয়েকটি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা হয় বলে দাবি করা হয়।

উল্লেখযোগ্য একটি ঘটনা ছিল, যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে পাকিস্তানের নজরদারি বিমান আরএএস-৭২সি ঈগল, যা এটিআর-৭২ প্ল্যাটফর্মে তৈরি, সাগরে নজরদারির চেষ্টা করলে তা মিগ-২৯কে দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং ফিরে যেতে বাধ্য হয়। মিগ-২৯কে মাত্র কয়েকশ মিটার দূরত্বে চলে গেলে পাকিস্তানি বিমান কার্যকলাপ বন্ধ করে উপকূলের দিকে সরে যায়।

প্রসঙ্গত, ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিরীহ বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় ভারত ৬ ও ৭ মে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের প্রতিশোধমূলক অভিযান চালায়। এতে অন্তত ৯টি সন্ত্রাসী স্থাপনায় বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। এই অভিযানে তিন বাহিনীই সরাসরি অংশ নেয়, যা সমন্বিত প্রতিরক্ষা অভিযানে ভারতের সক্ষমতার আরেকটি বড় দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ভোটে অনিয়মে পুরো আসনের নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা ফেরত চায় ইসি

‘অপারেশন সিঁদুর’ ঘিরে ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রস্তুতি: হামলার অপেক্ষায় ছিল যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন

আপডেট সময় ০৫:৪৬:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

‘অপারেশন সিঁদুর’ চলাকালে পাকিস্তানের ভেতরে সামরিক হামলার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত ছিল ভারতীয় নৌবাহিনী। দেশের সামরিক ইতিহাসে অন্যতম উচ্চমাত্রার এ অভিযানের সময় সমুদ্রপথে আঘাত হানার জন্য ‘হট স্ট্যান্ডবাই’-এ ছিল যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন। একাধিকবার ভূমি-ভিত্তিক লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের জন্য আদেশের অপেক্ষায় ছিল বাহিনী। তবে শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত হামলার নির্দেশ আসেনি। এমন তথ্য উঠে এসেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, হামলা চালানো হলে করাচি বন্দরে অবস্থানরত পাকিস্তানের নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ, সাবমেরিন এবং অন্যান্য সামরিক স্থাপনায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হতো। এই অভিযানে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছিল ব্রহ্মোস সুপারসনিক মিসাইল ও ‘ক্লাব’ সিরিজের ল্যান্ড-অ্যাটাক ক্ষেপণাস্ত্র, যেগুলো রুশ-নির্মিত ‘কিলো ক্লাস’ সাবমেরিনে সংযুক্ত রয়েছে। সূত্রের ভাষায়, “যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন উভয়ই উৎক্ষেপণের অপেক্ষায় ছিল।”

ভারতীয় বাহিনীর প্রস্তুতির বিপরীতে পাকিস্তানের নৌবাহিনী প্রতিক্রিয়াশীল মনোভাব গ্রহণ করে। এনডিটিভি জানায়, ভারতের আধুনিক প্রযুক্তি ও সামরিক সক্ষমতা বিবেচনায় পাকিস্তানের ফ্রিগেট ও করভেট শ্রেণির যুদ্ধজাহাজগুলো সমুদ্রে না গিয়ে করাচি বন্দরে অবস্থান নেয়।
এমনকি আকাশপথেও ভারতের দখলদারি ছিল স্পষ্ট। বিমানবাহী রণতরী আইএনএস বিক্রান্ত এবং এর অন্তর্ভুক্ত মিগ-২৯কে যুদ্ধবিমান উত্তর আরব সাগরে ভারতীয় আধিপত্য নিশ্চিত করে। এ সময় পাকিস্তানের বিমানবাহিনী কার্যত নিষ্ক্রিয় ছিল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে স্থলভিত্তিক হামলার কথাও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে। যদিও ব্যবহৃত অস্ত্র ও প্রযুক্তির বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি, তবে এসব হামলায় পাকিস্তানের অভ্যন্তরে বেশ কয়েকটি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা হয় বলে দাবি করা হয়।

উল্লেখযোগ্য একটি ঘটনা ছিল, যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে পাকিস্তানের নজরদারি বিমান আরএএস-৭২সি ঈগল, যা এটিআর-৭২ প্ল্যাটফর্মে তৈরি, সাগরে নজরদারির চেষ্টা করলে তা মিগ-২৯কে দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং ফিরে যেতে বাধ্য হয়। মিগ-২৯কে মাত্র কয়েকশ মিটার দূরত্বে চলে গেলে পাকিস্তানি বিমান কার্যকলাপ বন্ধ করে উপকূলের দিকে সরে যায়।

প্রসঙ্গত, ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিরীহ বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় ভারত ৬ ও ৭ মে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের প্রতিশোধমূলক অভিযান চালায়। এতে অন্তত ৯টি সন্ত্রাসী স্থাপনায় বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। এই অভিযানে তিন বাহিনীই সরাসরি অংশ নেয়, যা সমন্বিত প্রতিরক্ষা অভিযানে ভারতের সক্ষমতার আরেকটি বড় দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।