ঢাকা ০৫:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ শতাংশ শুল্ক ভারতের পোশাক খাতে ধাক্কা, বাংলাদেশ-ভিয়েতনাম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে এগিয়ে

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১১:১৬:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫
  • ৫৬০ বার পড়া হয়েছে

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত ৫০ শতাংশ শুল্কের কারণে ভারতের তৈরি পোশাক খাত মারাত্মক প্রভাবের মুখে পড়েছে। মার্কিন শুল্কের ফলে বিশ্বের নামিদামী অনেক ব্র্যান্ড তাদের ভারত থেকে অর্ডার স্থগিত বা স্থানান্তর শুরু করেছে, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ার মতো প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোতে অর্ডার সরানো হচ্ছে।

ভারতের নিটওয়্যার রাজধানী তামিলনাড়ুর তিরুপ্পুর, কোয়েম্বাটুর ও কারুর বিভিন্ন কারখানায় ১২ লাখের বেশি শ্রমিক কাজ করেন, যেখানে বছরে প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকার পোশাক রপ্তানি হয়। এর ৩০ শতাংশ রপ্তানি যায় যুক্তরাষ্ট্রে। নতুন শুল্ক আরোপের ফলে রপ্তানিতে ১০ থেকে ২০ শতাংশ পতনের আশঙ্কা রয়েছে, যা এক থেকে দুই লাখ শ্রমিকের চাকরি হ্রাসের ঝুঁকি তৈরি করছে।

তামিলনাড়ুর এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি কে এম সুব্রাহ্মনিয়ান বলেন, “মুনাফা মাত্র ৫ থেকে ৭ শতাংশ, শুল্ক বাড়ানোর খরচ ভাগাভাগি করা কঠিন। মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের ২০ শতাংশ, পাকিস্তানের ১৯ শতাংশ শুল্ক কম হওয়ায় তারা সস্তা বিকল্প হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে।”

নতুন শুল্ক কাঠামোর আওতায় ভারতের পোশাকের শুল্ক হার ৬৪ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে, যা অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের তুলনায় অনেক বেশি। মার্কিন বাজারে সস্তা পোশাক সরবরাহের কারণে অনেক বড় ব্র্যান্ড ইতোমধ্যে অর্ডার বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামে স্থানান্তর করছে।

শুল্ক বৃদ্ধির পাশাপাশি ভারতীয় তুলা আমদানিতে ১১ শতাংশ শুল্ক এবং জিএসটি অসঙ্গতির ফলে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো আরও প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে। সংশ্লিষ্টরা দাবি করেছেন, রপ্তানি টিকিয়ে রাখতে কাঁচামালের ওপর শুল্ক ৫ শতাংশের নিচে নামাতে হবে।

হোম টেক্সটাইল খাতেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোয়েম্বাটুর ও কারুর কারখানাগুলোতে বিছানা, তোয়ালে ইত্যাদি পণ্যের অর্ডার স্থগিত ও বিলম্বিত হচ্ছে, যা সরবরাহ চেইনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক ভারতীয় পোশাক ও টেক্সটাইল শিল্পের জন্য ‘বাণিজ্যিক অবরোধ’ হিসেবে দাঁড়িয়েছে, যা স্থায়ীভাবে ভারতের মার্কিন বাজারে প্রবেশাধিকার ক্ষুণ্ণ করতে পারে।

জনপ্রিয় সংবাদ

বিমানে ত্রাণ পৌঁছল গাজায়, মানবিক সংকট এখনও কমেনি

যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ শতাংশ শুল্ক ভারতের পোশাক খাতে ধাক্কা, বাংলাদেশ-ভিয়েতনাম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে এগিয়ে

আপডেট সময় ১১:১৬:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত ৫০ শতাংশ শুল্কের কারণে ভারতের তৈরি পোশাক খাত মারাত্মক প্রভাবের মুখে পড়েছে। মার্কিন শুল্কের ফলে বিশ্বের নামিদামী অনেক ব্র্যান্ড তাদের ভারত থেকে অর্ডার স্থগিত বা স্থানান্তর শুরু করেছে, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ার মতো প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোতে অর্ডার সরানো হচ্ছে।

ভারতের নিটওয়্যার রাজধানী তামিলনাড়ুর তিরুপ্পুর, কোয়েম্বাটুর ও কারুর বিভিন্ন কারখানায় ১২ লাখের বেশি শ্রমিক কাজ করেন, যেখানে বছরে প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকার পোশাক রপ্তানি হয়। এর ৩০ শতাংশ রপ্তানি যায় যুক্তরাষ্ট্রে। নতুন শুল্ক আরোপের ফলে রপ্তানিতে ১০ থেকে ২০ শতাংশ পতনের আশঙ্কা রয়েছে, যা এক থেকে দুই লাখ শ্রমিকের চাকরি হ্রাসের ঝুঁকি তৈরি করছে।

তামিলনাড়ুর এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি কে এম সুব্রাহ্মনিয়ান বলেন, “মুনাফা মাত্র ৫ থেকে ৭ শতাংশ, শুল্ক বাড়ানোর খরচ ভাগাভাগি করা কঠিন। মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের ২০ শতাংশ, পাকিস্তানের ১৯ শতাংশ শুল্ক কম হওয়ায় তারা সস্তা বিকল্প হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে।”

নতুন শুল্ক কাঠামোর আওতায় ভারতের পোশাকের শুল্ক হার ৬৪ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে, যা অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের তুলনায় অনেক বেশি। মার্কিন বাজারে সস্তা পোশাক সরবরাহের কারণে অনেক বড় ব্র্যান্ড ইতোমধ্যে অর্ডার বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামে স্থানান্তর করছে।

শুল্ক বৃদ্ধির পাশাপাশি ভারতীয় তুলা আমদানিতে ১১ শতাংশ শুল্ক এবং জিএসটি অসঙ্গতির ফলে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো আরও প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে। সংশ্লিষ্টরা দাবি করেছেন, রপ্তানি টিকিয়ে রাখতে কাঁচামালের ওপর শুল্ক ৫ শতাংশের নিচে নামাতে হবে।

হোম টেক্সটাইল খাতেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোয়েম্বাটুর ও কারুর কারখানাগুলোতে বিছানা, তোয়ালে ইত্যাদি পণ্যের অর্ডার স্থগিত ও বিলম্বিত হচ্ছে, যা সরবরাহ চেইনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক ভারতীয় পোশাক ও টেক্সটাইল শিল্পের জন্য ‘বাণিজ্যিক অবরোধ’ হিসেবে দাঁড়িয়েছে, যা স্থায়ীভাবে ভারতের মার্কিন বাজারে প্রবেশাধিকার ক্ষুণ্ণ করতে পারে।