ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সাম্প্রতিক বক্তব্য এবং দোহায় চালানো হামলা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। আলজাজিরার বিশ্লেষণধর্মী কলামে বেলেন ফার্নান্দেজ উল্লেখ করেছেন, কাতারে হামাস নেতাদের ওপর আঘাত শুধু একটি লক্ষ্যভিত্তিক অভিযান নয়, বরং ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বহিরাগত হত্যাকাণ্ড নীতিরই সম্প্রসারণ। কয়েক দশক আগে ইউরোপীয় মাটিতে মোসাদের গোপন অভিযানে যেভাবে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করা হয়েছিল, আজকের দোহা হামলা সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজায় চলমান অভিযানের মধ্যেই বিদেশে হামলা চালানোর মাধ্যমে ইসরায়েল একদিকে নিজ দেশের রক্তাক্ত অভিযান থেকে বিশ্ব মনোযোগ সরাতে চাইছে, অন্যদিকে এই আক্রমণগুলোকে ‘সন্ত্রাসবিরোধী লড়াই’ হিসেবে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করছে। কাতার সরকার হামলার কড়া নিন্দা জানিয়েছে এবং এটিকে সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদেও এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
নেতানিয়াহুর বক্তব্যে স্পষ্ট সতর্কবার্তা ছিল—যেসব দেশ সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিচ্ছে তারা ভবিষ্যতে ইসরায়েলের টার্গেটে পরিণত হতে পারে। এতে করে আন্তর্জাতিকভাবে অনিশ্চয়তা ও কূটনৈতিক সংকট আরও গভীর হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের কিছু মহলও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, এই ধরনের পদক্ষেপ শান্তি প্রক্রিয়া ও কূটনৈতিক আলোচনার পথ রুদ্ধ করতে পারে।
আলজাজিরার কলামে আরও বলা হয়েছে, ইসরায়েল বর্তমানে কার্যত দায়মুক্তি নিয়ে যেকোনো জায়গায় হামলা চালানোর ক্ষমতা প্রদর্শন করছে। কিন্তু এর পরিণতি কী হতে পারে, সেটি এখনো অজানা। অনেকের মতে, নেতানিয়াহুর এই অবস্থানকে ‘বিশ্বের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা’ হিসেবে দেখা যেতে পারে, যা অন্তত তাদের জন্য একটি সতর্ক সংকেত, যারা এখনও ইসরায়েলের তথাকথিত ‘ন্যায়বিচার’-এর মোহে আবদ্ধ রয়েছেন