ঢাকা ০৯:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গুমে রাজি না হওয়া কর্মকর্তাদের তথ্যও যেত শেখ হাসিনার কাছে

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১১:৫০:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫
  • ৫৩৫ বার পড়া হয়েছে

এবার গুম–খুনে জড়াতে কিছু কর্মকর্তা অস্বীকৃতি জানিয়ে তা লিখিতভাবে জানানোর তথ্য পেয়েছে গুম–সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন। এসব চিঠি সরাসরি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছেও পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করা হয়েছে সম্প্রতি প্রকাশিত অন্তর্বর্তী তদন্ত প্রতিবেদনে।

গতকাল সোমবার (২৪ জুন) প্রকাশিত কমিশনের দ্বিতীয় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে বলা হয়, ৪ জুন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে এমন একটি ঘটনার উদাহরণ তুলে ধরা হয়েছে।

এক ঘটনায় দেখা যায়, র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার এক কর্মকর্তাকে দীর্ঘদিন আটক এক বন্দীকে হত্যা করতে বলা হয়। কারণ, অসতর্কতায় বন্দীর অবস্থান ফাঁস হয়ে গিয়েছিল। তবে তিনি বেআইনি এই নির্দেশ মানতে অস্বীকৃতি জানান এবং বলেন, ‘যদি ওনাকে মারতে হয়, তাহলে আমাকে সরিয়ে দিন, আমি মারব না।’ শেষ পর্যন্ত বন্দীকে হত্যা করা হয়নি এবং ওই কর্মকর্তা ৫ আগস্টের পরও চাকরিতে বহাল ছিলেন।

তদন্ত কমিশন বলছে, এ ঘটনা পুরোপুরি কাকতালীয়ভাবে উন্মোচিত হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এক সদস্য ৫ আগস্টের পর গণভবনে পরিত্যক্ত কিছু নথি ঘেঁটে র‌্যাব কর্মকর্তাদের হাতে লেখা দুটি চিঠি আবিষ্কার করেন। এতে তারা বেআইনি আদেশ মানতে অস্বীকৃতি জানান এবং এসব চিঠি গোয়েন্দা শাখার পরিচালক বরাবর লিখলেও সেগুলো সরাসরি শেখ হাসিনার কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। তিনি ২০১৫ সাল থেকে ভারত পালানোর আগপর্যন্ত এসব নথি নিজের কাছে রেখেছিলেন।

এক চিঠিতে লেখা ছিল, ‘যদি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বা গুলি চালানোর পরিকল্পনা থাকে, তাহলে আমি সে অভিযানে অংশ নেব না।’ কমিশন বলছে, এসব ‘ব্যক্তিগত ঘোষণাপত্র’ শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত তত্ত্বাবধানের ব্যাপ্তি এবং সংবেদনশীল নথিপত্র দীর্ঘদিন ধরে সংরক্ষণের রাজনৈতিক গুরুত্ব বোঝায়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ৫ আগস্টের পর সেনাপ্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূঁইয়ার বক্তব্যে জানা যায়, ওই দুই কর্মকর্তা একটি মিলিটারি পুলিশ চেকপোস্টে আশ্রয় নিয়ে পরে সেনাবাহিনীতে ফিরে যান। অথচ আদেশ অমান্য করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি—যা ওই সময়কার রাজনৈতিক-প্রশাসনিক বাস্তবতায় ব্যতিক্রম।

জনপ্রিয় সংবাদ

১২ দিনের মাথায় মৃত্যু: লিভারপুল তারকা দিয়োগো জোটা ভয়াবহ দুর্ঘটনায় নিহত

গুমে রাজি না হওয়া কর্মকর্তাদের তথ্যও যেত শেখ হাসিনার কাছে

আপডেট সময় ১১:৫০:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫

এবার গুম–খুনে জড়াতে কিছু কর্মকর্তা অস্বীকৃতি জানিয়ে তা লিখিতভাবে জানানোর তথ্য পেয়েছে গুম–সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন। এসব চিঠি সরাসরি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছেও পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করা হয়েছে সম্প্রতি প্রকাশিত অন্তর্বর্তী তদন্ত প্রতিবেদনে।

গতকাল সোমবার (২৪ জুন) প্রকাশিত কমিশনের দ্বিতীয় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে বলা হয়, ৪ জুন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে এমন একটি ঘটনার উদাহরণ তুলে ধরা হয়েছে।

এক ঘটনায় দেখা যায়, র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার এক কর্মকর্তাকে দীর্ঘদিন আটক এক বন্দীকে হত্যা করতে বলা হয়। কারণ, অসতর্কতায় বন্দীর অবস্থান ফাঁস হয়ে গিয়েছিল। তবে তিনি বেআইনি এই নির্দেশ মানতে অস্বীকৃতি জানান এবং বলেন, ‘যদি ওনাকে মারতে হয়, তাহলে আমাকে সরিয়ে দিন, আমি মারব না।’ শেষ পর্যন্ত বন্দীকে হত্যা করা হয়নি এবং ওই কর্মকর্তা ৫ আগস্টের পরও চাকরিতে বহাল ছিলেন।

তদন্ত কমিশন বলছে, এ ঘটনা পুরোপুরি কাকতালীয়ভাবে উন্মোচিত হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এক সদস্য ৫ আগস্টের পর গণভবনে পরিত্যক্ত কিছু নথি ঘেঁটে র‌্যাব কর্মকর্তাদের হাতে লেখা দুটি চিঠি আবিষ্কার করেন। এতে তারা বেআইনি আদেশ মানতে অস্বীকৃতি জানান এবং এসব চিঠি গোয়েন্দা শাখার পরিচালক বরাবর লিখলেও সেগুলো সরাসরি শেখ হাসিনার কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। তিনি ২০১৫ সাল থেকে ভারত পালানোর আগপর্যন্ত এসব নথি নিজের কাছে রেখেছিলেন।

এক চিঠিতে লেখা ছিল, ‘যদি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বা গুলি চালানোর পরিকল্পনা থাকে, তাহলে আমি সে অভিযানে অংশ নেব না।’ কমিশন বলছে, এসব ‘ব্যক্তিগত ঘোষণাপত্র’ শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত তত্ত্বাবধানের ব্যাপ্তি এবং সংবেদনশীল নথিপত্র দীর্ঘদিন ধরে সংরক্ষণের রাজনৈতিক গুরুত্ব বোঝায়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ৫ আগস্টের পর সেনাপ্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূঁইয়ার বক্তব্যে জানা যায়, ওই দুই কর্মকর্তা একটি মিলিটারি পুলিশ চেকপোস্টে আশ্রয় নিয়ে পরে সেনাবাহিনীতে ফিরে যান। অথচ আদেশ অমান্য করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি—যা ওই সময়কার রাজনৈতিক-প্রশাসনিক বাস্তবতায় ব্যতিক্রম।